চায়ের পরিচিতি, উৎপত্তি এবং চায়ের উপকারিতা ও অপকারিতা ও খাওয়ার সঠিক সময়

Spread the love

চা বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি তরল খাবার। সবাই চা খেতে ভালোবাসে। চা একটি  পানীয় যাতে ট্যানিন এবং ক্যাফেইন থাকে যা শরীরকে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। অতএব, চা পান করলে  আবার উজ্জীবিত হওয়ার অনুভূতি দেয়। কিন্তু বেশি  চা পান করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে যদি তা নেশা বা আসক্তিতে পরিণত হয়।চায়ের উপকারিতার কারণে এটিকে  ওষুধ হিসেবেও  ব্যবহার করা হয়। আবার  অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিও হতে পারে।

চা আসলে কি?

চায়ের বোটানিক্যাল নাম হচ্ছে Camellia sinensis এবং এটি Theaceae পরিবারের অন্তর্গত। চা মূলত তেতো, গরম প্রকৃতির এবং শক্তিবর্ধক।

চাপাতার  আকার ৯-১৫ মিটার উঁচু, ছোট-পাতা, চিরহরিৎ ঝোপ। চা উৎপাদনের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর গাছ কাটা হয়, যার কারণে এই গাছটি প্রায় ৬০-১৫০ সেন্টিমিটার আকারে থাকে। চা পাতার জন্য দুটি পাতা এবং এর সামনের অংশের একটি কুঁড়ি ব্যবহার করা হয়। চা পাতাগুলি সরল, ৩-৬ সেমি ব্যাস, মসৃণ, নীচের অংশে কিছুটা পিউবেসেন্ট এবং খুব সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত। এর ফুলগুলি সাদা রঙের, সুগন্ধি, একক বা ২-৪ টি একসাথে, গোলাকার। এর ফল ত্রিভুজাকার, যার ব্যাস ৮ সেমি, প্রায় গোলাকার, মসৃণ, বাদামী রঙের, শক্ত বীজের খোসার মতো, চকচকে দুটি বীজ। চায়ের আদি নিবাস হচ্ছে  চীন, জাপান, মালায়া, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। ১৭ শতকে ইংল্যান্ডের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলাদেশে চায়ের প্রচার করেছিল।

চায়ের উপকারিতা

  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস হিসেবে চা কাজ করে
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
  •  মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি করে
  • ওজন হ্রাসে সাহায্য করে
  • পাচন প্রক্রিয়া উন্নতি করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
  • মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে
  • গলার সংক্রমণ নিরাময় করে
  • মূত্রনালীর রোগে ব্যবহৃত হয়
  • যৌন শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
  • মজবুত ও চকচকে চুলের জন্য চা এর ব্যবহার করা হয়
  • রোদে পোড়া দাগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়

চায়ের অপকারিতা

অতিরিক্ত চা খাওয়ার ফলে ঘুমের সমস্যা হয়। কারণ চায় থাকে ক্যাফেইন যা ঘুম আসার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে। তাই অতিরিক্ত চা পান করার ফলে ঘুমে ব্যাঘাত করার কারণ হচ্ছে ক্যাফেইন। ক্যাফেইন মেলাটোনিন হরমোনের উপর প্রভাব রাখে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই অতিরিক্ত চা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

  • অতিরিক্ত ক্যাফেইনের সমস্যা তৈরি হয়
  • পুষ্টি শোষণ কমে যায়
  • হজমের সমস্যা হয়
  • মাথা ব্যাথা তৈরি হয়
  • বুক জ্বালা করার সমস্যা তৈরি হয়
  •  অতিরিক্ত চা খাওয়ার ফলে ঠোঁট কালো হয়ে যায় যা খুবই বির*ক্তকর
  • হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে
  • লৌহ শোষণে বাধা দেয়
  • অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার হয় চা তে
  • দাঁতের উপর প্রভাব পড়ে

চা কখন খাবেন? 

চা খাওয়ার সঠিক সময় অনেকেরই অজানা। অনেকেই সকালে  খালি পেটে চা খেয়ে থাকে এই কাজ মোটেও ঠিক নয়।  খালি পেটে বিশুদ্ধ পানি খাওয়া ভালো তাই চা থেকে বিরত থাকতে হবে। যারা অতিরিক্ত চা খেতে পছন্দ করেন তারা এই অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন।  সকালবেলা খালি পেটে চা খাবেন না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে  শরীরের পানি শূন্যতা দূর করার জন্য অবশ্যই পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করুন এতে করে পানি স্বল্পতা দূর হবে। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানিরা বলেছেন চা কোন অস্বাস্থ্যকর পানীয় নয়। তবে চা খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিনি ত্যাগ করতে হবে। এখন মূল কথায় আসি মূলত কখন চা খাওয়া সঠিক সময় ।

  • বিকেলের নাশতার পর  হালকা কিছু খাওয়ার পর চা বা কফি খাওয়া যেতে পারে। দুধ, চিনি ছাড়া লাল চা বা ব্ল্যাক কফি খেলে ভালো হয়।

Spread the love

Leave a Reply